রয়্যাল স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন যুক্তরাষ্ট্রে লা লিগার ম্যাচ আয়োজনের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে

এই ছবিটি লা লিগার লোগো। এটি স্পেনের পেশাদার ফুটবল লিগ।
লা লিগা লোগো ছবি AI


স্প্যানিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন যুক্তরাষ্ট্রে লা লিগার ম্যাচের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে

স্প্যানিশ ফুটবলে এবার আসছে বড় পরিবর্তনের আভাস। দীর্ঘদিন ধরে শুধু ইউরোপেই সীমাবদ্ধ থাকা লা লিগার ম্যাচ এবার প্রথমবারের মতো ইউরোপের বাইরে অনুষ্ঠিত হতে পারে। আর সেই ঐতিহাসিক ম্যাচের জন্য ভিয়ারিয়াল ও বার্সেলোনাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। রয়্যাল স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন (Royal Spanish Football Federation - RFEF) ইতোমধ্যেই এই পরিকল্পনার সবুজ সংকেত দিয়েছে।

মিয়ামিতে হবে ম্যাচ?

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামির বিখ্যাত হার্ড রক স্টেডিয়ামে। ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে সাতটি ম্যাচের আয়োজক এই স্টেডিয়াম, এবার লা লিগার ইতিহাসের নতুন অধ্যায়ের সাক্ষী হতে পারে। বর্তমানে ম্যাচটি নির্ধারিত আছে ২১শে ডিসেম্বর ২০২৫, ভিয়ারিয়ালের এস্তাদিও দে লা সেরামিকায়। তবে অনুমোদন প্রক্রিয়া শেষ হলে ২০শে ডিসেম্বরই মিয়ামিতে মুখোমুখি হবে দুই দল।

ফিফা ও উয়েফার অনুমতি বাকি

যদিও RFEF অনুমোদন দিয়েছে, তবুও চূড়ান্তভাবে ম্যাচ আয়োজনের জন্য ফিফা ও উয়েফার অনুমোদন প্রয়োজন। ফিফার বর্তমান নিয়মে ঘরোয়া লিগের ম্যাচ বিদেশে খেলার অনুমতি নেই। তবে গত বছর এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়েছিল, যা এই পরিকল্পনাকে কিছুটা আশাব্যঞ্জক করে তুলেছে।

সমর্থকদের তীব্র বিরোধিতা

এই সিদ্ধান্তে কিন্তু সবাই খুশি নয়। স্প্যানিশ ফুটবল সমর্থক অ্যাসোসিয়েশন (FASFE), বার্সেলোনা ও ভিয়ারিয়ালের ফ্যান গ্রুপগুলো এক যৌথ বিবৃতিতে পরিকল্পনাটির তীব্র বিরোধিতা জানিয়েছে। তাদের ভাষায়, এটি "সম্পূর্ণ, চূড়ান্ত এবং দৃঢ়ভাবে অগ্রহণযোগ্য"। তারা RFEF এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে এই উদ্যোগ বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে, প্রয়োজন হলে আইনি পদক্ষেপ নেবে।

এর আগে এমন চেষ্টার পরিণতি

এটাই প্রথম নয় যে লা লিগা বিদেশে ম্যাচ আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে। ২০১৯ সালে বার্সেলোনা ও জিরোনার ম্যাচ মিয়ামিতে নেওয়ার চেষ্টা হলেও, RFEF ও খেলোয়াড়দের ইউনিয়নের বিরোধিতায় তা বাতিল হয়। গত বছরও বার্সেলোনা ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের ম্যাচ মিয়ামিতে আনার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে পরিকল্পনাটি সফল হয়নি।

অন্য লিগের অভিজ্ঞতা

ইতালির সুপার কাপ, স্প্যানিশ সুপার কাপ, এমনকি সৌদি আরবে আয়োজিত কিছু এক-অফ ম্যাচ প্রমাণ করেছে যে, ফুটবলের গ্লোবাল ভক্তদের কাছে বিদেশে ম্যাচ আয়োজন জনপ্রিয় হতে পারে। তবে লিগের নিয়মিত ম্যাচ বিদেশে আয়োজন এখনো বিরল ঘটনা। প্রিমিয়ার লিগও একসময় বিদেশে অতিরিক্ত ম্যাচ খেলার প্রস্তাব করেছিল, কিন্তু ভক্তদের বিরোধিতায় তা বাস্তবায়িত হয়নি।

সামনে কী হতে পারে?

এখন ফুটবল বিশ্ব তাকিয়ে আছে ফিফা ও উয়েফার সিদ্ধান্তের দিকে। যদি সবুজ সংকেত মেলে, তবে ডিসেম্বরেই ইতিহাসের প্রথম লা লিগা ম্যাচ ইউরোপের বাইরে অনুষ্ঠিত হবে। আর যদি অনুমোদন না মেলে, তবে পরিকল্পনাটি কাগজেই থেকে যাবে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে—ফুটবলের এই ‘গ্লোবালাইজেশন’ সমর্থকদের কতটা মন জয় করতে পারবে? নাকি প্রথা ভাঙার এই প্রচেষ্টা আরও একবার বিরোধিতার মুখে পড়ে থমকে যাবে?

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন