বাংলাদেশের ক্রিকেটের সফলতম ওপেনার এবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক পদে লড়তে চলেছেন। শুধু পরিচালক হিসেবেই নয়, তামিম জানিয়েছেন, সুযোগ পেলে তিনি সভাপতি পদের জন্যও লড়তে আগ্রহী। তার এই আকস্মিক সিদ্ধান্ত দেশের ক্রিকেট অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কেন তামিম হঠাৎ প্রশাসনে আসছেন? তার লক্ষ্য কী? এই সব প্রশ্নের উত্তর নিয়েই সাজানো হয়েছে আজকের এই ব্লগ পোস্ট।
মাঠের বাইরে নতুন লক্ষ্য
খেলোয়াড়ি জীবন থেকে অবসরের পর তামিমের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে অনেকেরই কৌতূহল ছিল। কেউ ভেবেছিলেন তিনি কোচিংয়ে আসবেন, কেউ বা ধারাভাষ্যে। কিন্তু তামিম বেছে নিলেন ভিন্ন পথ—প্রশাসন। তিনি একটি শীর্ষস্থানীয় দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিশ্চিত করেছেন যে তিনি আসন্ন বিসিবি নির্বাচনে অংশ নেবেন।
তামিমের এই সিদ্ধান্তকে তার ক্যারিয়ারের একটি নতুন অধ্যায় হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, সরাসরি সভাপতি পদে নির্বাচন করা সম্ভব নয়, কারণ প্রথমে তাকে একজন পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হতে হবে। এরপরই কেবল তিনি সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। তার এই দূরদর্শিতা এবং ধাপে ধাপে এগোনোর পরিকল্পনা থেকে বোঝা যায়, তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য দীর্ঘমেয়াদী কিছু করতে আগ্রহী।
বিসিবিতে পরিবর্তনের স্বপ্ন
তামিম মনে করেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আরও এগিয়ে নিতে হলে প্রশাসনে আধুনিক চিন্তাভাবনার মানুষের আগমন জরুরি। তিনি বলেন, "বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আধুনিক করতে হলে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদেরও আধুনিক মননসম্পন্ন হতে হবে।" তার এই বক্তব্য থেকে পরিষ্কার যে তিনি শুধু পদে বসতে চান না, বরং বাংলাদেশের ক্রিকেটে সত্যিকারের পরিবর্তন আনতে চান।
তিনি বর্তমানে ক্রিকেটে চলমান নোংরা রাজনীতি, একে অপরের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো এবং ব্যক্তিগত আক্রমণের কঠোর সমালোচনা করেন। তামিম বিশ্বাস করেন, এখন সময় এসেছে যোগ্যতাকে প্রাধান্য দেওয়ার। কোন প্রার্থী ক্রিকেটের জন্য সবচেয়ে ভালো কাজ করতে পারবে, সেই আলোচনা হওয়া উচিত।
যেখানে জোর দিতে চান তামিম
যদি তিনি নির্বাচিত হন, তবে তার প্রধান লক্ষ্য কী হবে? তামিম স্পষ্ট করে বলেছেন যে তিনি একসঙ্গে অনেক কিছু করার চেষ্টা করবেন না, বরং কয়েকটি মূল বিষয়ের ওপর মনোযোগ দেবেন। তার মতে, বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো দুর্বল অবকাঠামো।
বিসিবি বিশ্বের অন্যতম ধনী বোর্ড হওয়া সত্ত্বেও, তরুণ প্রতিভাদের বিকাশের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নেই। তামিম বলেন, "আমাদের খেলোয়াড় আছে, কোচ আছে, কিন্তু নতুন প্রতিভা লালন-পালনের জন্য কোনো অবকাঠামো নেই।" এই সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি চার বছরের মধ্যে এমন একটি অবকাঠামো তৈরি করতে চান, যা আগামী ৮-১০ বছরের জন্য বাংলাদেশের ক্রিকেটকে শক্তিশালী করবে।
শেষ কথা
তামিমের এই নতুন যাত্রা বাংলাদেশের ক্রিকেটে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। একজন সাবেক সফল খেলোয়াড় হিসেবে তার অভিজ্ঞতা, আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং পরিবর্তনের ইচ্ছা যদি প্রশাসনে প্রতিফলিত হয়, তবে তা দেশের ক্রিকেটের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক হবে। এখন শুধু দেখার অপেক্ষা, তামিম তার নতুন ইনিংসে কতটা সফল হন।
আপনার মতামত কী?
তামিমের বিসিবিতে আসা কি বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য ভালো হবে? আপনার মতামত নিচে কমেন্ট বক্সে জানান!