রোববার নিউ ইয়র্কের কুইন্সে আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে ইউএস ওপেন ফাইনালে হাজির হন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার উপস্থিতি ঘিরে শুরু থেকেই কৌতূহল ছিল—দর্শকরা তাকে কেমনভাবে গ্রহণ করবেন?
স্টেডিয়ামে প্রবেশ করার সময় শোনা যায় উল্লাসের সঙ্গে দুয়োধ্বনিও। তবে তখনো বেশিরভাগ আসন খালি থাকায় প্রতিক্রিয়া খুব স্পষ্ট ছিল না। কড়া নিরাপত্তার কারণে ম্যাচের শুরুও বিলম্বিত হয়। খেলা শুরুর সময় নির্ধারিত ছিল দুপুর ২টা (ইটি), কিন্তু তা পিছিয়ে শুরু হয় ২:৩০-এ।
সম্প্রচারে ট্রাম্পকে ‘নীরব’ করে রাখা
এবিসি টেলিভিশনের সম্প্রচারে দেখা যায়, ট্রাম্প বক্স সিট থেকে উঠে দর্শকদের দিকে হাত নাড়েন। কিন্তু সম্প্রচারে দর্শকদের কোনো প্রতিক্রিয়া শোনা যায়নি। পরবর্তীতে জানা যায়, ইউনাইটেড স্টেটস টেনিস অ্যাসোসিয়েশন (USTA) সম্প্রচারকদের মাঠের বাইরের অপ্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া বা বিঘ্ন দেখাতে নিষেধ করেছিল।
নিরাপত্তার বাড়তি ব্যবস্থা
চ্যাম্পিয়নশিপ ম্যাচে মুখোমুখি হওয়ার আগে কার্লোস আলকারাজ ও জ্যানিক সিনারের জন্য স্টেডিয়ামজুড়ে কড়া নিরাপত্তা দেখা যায়। সিক্রেট সার্ভিসসহ ফেডারেল নিরাপত্তা কর্মকর্তারা দর্শকদের ব্যাগ পরীক্ষা এবং মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে ভেতরে ঢোকার ব্যবস্থা করেন।
দর্শকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া
নিউ ইয়র্কের ব্যাংকার ডেভ বলেন— “সে আসুক বা না আসুক আমার কিছু যায় আসে না। আমি তার ভক্ত নই। কে তার ভক্ত? সে তো একজন দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধী।”
অন্যদিকে মিশিগান থেকে আসা অবসরপ্রাপ্ত টেনিস ভক্ত ক্যারেন স্টার্ক মনে করেন— “তিনি যেখানে খুশি যেতে পারেন, চাইলে ম্যাচও দেখতে পারেন।”
খেলাধুলা ও ট্রাম্পের প্রভাব
খেলাধুলায় ট্রাম্পের সম্পৃক্ততা নতুন নয়। রিপাবলিকান এই নেতা প্রায়ই ক্রীড়া নীতি নিয়ে মন্তব্য করেছেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তিনি একটি নির্বাহী আদেশে রূপান্তরিত নারী ক্রীড়াবিদদের নারী প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নেন। সমর্থকরা একে ন্যায্যতার দাবি করলেও সমালোচকরা এটিকে বৈষম্য হিসেবে দেখেন।
এছাড়া, তিনি ওয়াশিংটন কমান্ডারস ফুটবল দলকে তাদের পুরোনো নাম "রেডস্কিনস"-এ ফিরিয়ে আনতে চাপ দিয়েছিলেন। তবে নামটি নেটিভ আমেরিকানদের জন্য বর্ণবাদী হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েন।
ইউএস ওপেন ফাইনালের আগে, আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামের বাইরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য ইউএস সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টরা নিরাপত্তা প্রহরায় ছিলেন (রয়টার্স)। |
জনপ্রিয়তায় পতন
রয়টার্স/ইপসোস-এর জরিপ বলছে, জুলাইয়ের শেষ ও আগস্টের মাঝামাঝি ট্রাম্পের সমর্থন নেমে আসে ৪০%-এ, যা তার প্রেসিডেন্সির সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন। রিপাবলিকান সমর্থকদের মধ্যেই মূলত তার জনপ্রিয়তা সীমাবদ্ধ, তাই ডেমোক্র্যাট অধ্যুষিত নিউ ইয়র্কে তার উপস্থিতি স্বাভাবিকভাবেই বিতর্কের জন্ম দেয়।
আগে থেকেও নজরে ছিলেন
ট্রাম্প এর আগেও বিভিন্ন বড় ক্রীড়া ইভেন্টে অংশ নিয়েছেন। ফেব্রুয়ারিতে সুপার বোল ও আলটিমেট ফাইটিং চ্যাম্পিয়নশিপে গিয়েছিলেন তিনি, সেখানেও দর্শকদের কাছ থেকে উল্লাসের পাশাপাশি দুয়োধ্বনি শুনতে হয়েছিল। সাধারণত সপ্তাহান্তে ওয়াশিংটন, নিউ জার্সি বা ফ্লোরিডায় গল্ফ খেলায় সময় কাটালেও এবার ইউএস ওপেন ফাইনালে তার উপস্থিতি আবারো আলোচনার জন্ম দিল।