কুলদীপ-তিলকের দাপট

দুবাই: এশিয়া কাপ ২০২৫-এর ফাইনালে ভারত তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে নবম বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত টানটান উত্তেজনায় ভরা এই ম্যাচে, অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের দল মাত্র দুই বল বাকি থাকতেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।
পাকিস্তানের ব্যাটিং ধস
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান দারুণ শুরু করে। ওপেনার সাহেবজাদা ফারহান ৫৭ রানের একটি চমৎকার অর্ধশতক হাঁকান। একসময় তাদের স্কোর ছিল মাত্র ১২ ওভারে ১ উইকেটে ১১৩ রান। মনে হচ্ছিল, পাকিস্তান অনায়াসে ১৬০-১৭০ রান করবে। কিন্তু ঠিক তখনই ভারতীয় স্পিনার কুলদীপ যাদব তার জাদু দেখান।
কুলদীপের বিধ্বংসী বোলিংয়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ মুহূর্তেই ভেঙে পড়ে। তারা শেষ ৯টি উইকেট হারায় মাত্র ৩৩ রান যোগ করতে গিয়ে! কুলদীপের স্পেলই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। তিনি এক ওভারেই তুলে নেন ৩টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। পাকিস্তানকে ১৯.১ ওভারে মাত্র ১৪৬ রানে অলআউট করে দেয় ভারত। কুলদীপ যাদব নেন ৪টি উইকেট এবং অক্ষর প্যাটেল পান ২টি উইকেট।
ভারতের নড়বড়ে শুরু ও তিলকের দায়িত্বশীল ইনিংস
১৪৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারত শুরুতে বেশ চাপে পড়ে যায়। ফর্মে থাকা অভিষেক শর্মা, অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব এবং শুভমান গিল—শীর্ষ সারির এই তিন ব্যাটসম্যান দ্রুত ফিরে যান। ভারতের স্কোর একসময় বেশ খারাপ অবস্থায় ছিল।
তবে, তরুণ ব্যাটসম্যান তিলক ভার্মা একাই ভারতের ইনিংসের হাল ধরেন। তিনি ঠান্ডা মাথায় ব্যাট করে ৬৯ রানের একটি অপরাজিত অর্ধশতক হাঁকান। সঞ্জু স্যামসন ও বিশেষ করে শিবম দুবের (৩৩ রান) সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়ে তিলক দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে যান। শেষ ৫ ওভারে ভারত দারুণ ব্যাট করে।
ম্যাচের আসল জয়: ডেথ ওভারের পার্থক্য
ম্যাচটি আসলে জেতা হয়েছে ডেথ ওভারগুলিতে (১৫-২০ ওভার)। যেখানে পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা শেষ দিকে কুলদীপের সামনে আত্মসমর্পণ করে বড় ধরনের ব্যাটিং ধস ঘটায়, সেখানে ভারতের ব্যাটসম্যানরা কঠিন মুহূর্তে স্নায়ু ধরে রাখে।
প্যারামিটার | পাকিস্তান (১৫-২০ ওভার) | ভারত (১৫-২০ ওভার) |
---|---|---|
স্কোর | ১৮/৬ | ৫০/১ |
রান-রেট | ৪.৩২ | ১০.৭১ |
পাকিস্তানের ২০-৩০ রান কম করাটাই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়। শেষ ওভারে ভারতের দরকার ছিল ১০ রান। স্নায়ুচাপের মুখেও তিলক ভার্মা এক ছক্কা মেরে স্কোর সমান করে দেন, আর এরপর ক্রিজে আসা রিঙ্কু সিং প্রথম বলেই বাউন্ডারি মেরে ভারতের ঐতিহাসিক জয় নিশ্চিত করেন।