পাকিস্তানের পক্ষে এশিয়া কাপ ফাইনাল ঘুরে দাঁড়ানোর উপায়

পাকিস্তানী বোলার হারিস রউফ বোলিং করছেন ভারত এর বিরুদ্ধে ছবি : গেটটি ইমজেস

 
এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াতে হলে পাকিস্তানকে কয়েকটি মূল বিষয়ের উপর নজর দিতে হবে। ভারতের টানা দুই জয়ে এটা স্পষ্ট যে পাকিস্তান এই ফাইনালে একটি অপ্রত্যাশিত জয় খুঁজছে, কোনো অনিবার্য গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে না।


১. পাওয়ারপ্লে-তে আরও আক্রমণাত্মক ব্যাটিং ধরে রাখা

পাকিস্তানের জন্য পাওয়ারপ্লে হলো সর্বোচ্চ আক্রমণের সময়। তারা আগের দুই ম্যাচে দ্রুত গতি দেখিয়েছে, কিন্তু ভারত বরাবরই তাদের ধাক্কা দিয়ে বিপদে ফেলেছে। ভারতকে বড় টার্গেট দিতে হলে বা বড় স্কোর তাড়া করতে হলে, পাকিস্তানকে প্রথম ৬ ওভারের পরেও আক্রমণাত্মক ধারা বজায় রাখতে হবে

  • দ্রুত গতি ধরে রাখা: আগের ম্যাচে মধ্য ওভারে মন্থরতা তাদের ১৯০-২০০ রানের লক্ষ্যকে ১৭১-এ নামিয়ে এনেছিল। এই ফাইনালের অতিরিক্ত চাপ থাকা সত্ত্বেও, টার্গেট সেট করার সময় তাদের সর্বদা অল-আউট আক্রমণাত্মক থাকতে হবে
  • স্পিনারদের মোকাবিলা: ভারতের স্পিনাররা পাওয়ারপ্লে-র পর পাকিস্তানকে চেপে ধরেছিল। স্পিনারদের প্রতি আরও সাহসী এবং কার্যকর হওয়ার পথ খুঁজে নিতে হবে, যেমন তারা একটি ম্যাচে কিছুটা করেছিল, যেখানে ৪ ওভারে ৩৬ রান তুলেছিল।


২. ভারতের মধ্য ও নিম্ন ব্যাটিং অর্ডারকে উন্মোচন করা

এই এশিয়া কাপে ভারতের টপ অর্ডারই বেশিরভাগ কাজ করেছে, যার কারণে তাদের ৬ নম্বর ও তার নিচের ব্যাটাররা খুব বেশি ব্যাটিং করার সুযোগ পাননি। এটাই পাকিস্তানের জন্য সবচেয়ে বড় সুযোগ।

  • শীর্ষ ক্রমকে দ্রুত ভেঙে দেওয়া: ভারতের ৬ থেকে ১১ নম্বর ব্যাটাররা এই টুর্নামেন্টে ফুল মেম্বার দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম বল খেলেছেন এবং তাদের স্ট্রাইক রেটও (১১০.৫৮) সবচেয়ে কম। যদি পাকিস্তানের বোলাররা ভারতের ওপেনারদের দ্রুত আউট করে দিতে পারে, তাহলে এটি ভারতের জন্য একটি বড় সমস্যা তৈরি করবে, কারণ তাদের নিম্ন অর্ডার এখনও সেভাবে পরীক্ষিত নয়।
  • পাকিস্তানের নিম্ন অর্ডারের দক্ষতা: পাকিস্তানের নিম্ন অর্ডারের ব্যাটাররা (স্ট্রাইক রেট ১৪২.৪৮) ভারতের চেয়ে অনেক বেশি আক্রমণাত্মক এবং বেশি বল খেলার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, যা দরকার হলে তাদের জন্য সুবিধা দেবে।


৩. শাহীন আফ্রিদিকে জ্বলে উঠতে হবে

পাকিস্তানের জয়ের জন্য শাহীন আফ্রিদির প্রথম ওভারের উইকেট পাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। ভারতের উদ্বোধনী ব্যাটাররা আফ্রিদির বিরুদ্ধে খুবই আক্রমণাত্মক ছিলেন।

  • ভারতের টপ অর্ডারকে লক্ষ্য: ভারতের টপ অর্ডারের ওপরই তাদের সাফল্যের বেশিরভাগটা নির্ভর করে। তাই আফ্রিদির উচিত হবে নিজের প্রথম ওভারের উইকেটের ধারা ধরে রাখা, যেমনটা তিনি শেষ দুটি "জিততেই হবে" ম্যাচে করেছেন।
  • আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া: ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচের পর থেকে আফ্রিদি ভারতের বিরুদ্ধে তেমন সফল নন (৪ ম্যাচে প্রায় ১৪ ওভারে মাত্র ১ উইকেট)। এই ফাইনাল তার জন্য পুরনো ব্যর্থতা মুছে ফেলার এবং দলের ফ্রন্টলাইন পেসার হিসেবে নিজের গুরুত্ব প্রমাণ করার মঞ্চ।


৪. মানসিক চাপকে জয় করা

ভারতীয় অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন যে ভারত বনাম পাকিস্তান এখন আর প্রতিদ্বন্দ্বিতাই নয়, যা পাকিস্তানের ওপর থেকে চাপ কমানোর একটি কৌতূহলী চেষ্টা। পাকিস্তানকে অবশ্যই এই বিষয়টিকে তাদের সুবিধার জন্য ব্যবহার করতে হবে।

  • চাপমুক্ত খেলা: যেহেতু ভারতই এখন ফেভারিট, তাই পাকিস্তানের কাছে হারানোর কিছু নেই। তাদের উচিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০১৭ সালের ফাইনালের মতো নিখুঁত একটি ম্যাচ খেলার চেষ্টা করা, যেখানে একটি নিম্নমানের পাকিস্তান দল স্পষ্টতই উন্নত ভারতকে উড়িয়ে দিয়েছিল।
  • উত্সাহের সাথে খেলা: ভারতের সেরা পারফরম্যান্সের সামনে পাকিস্তান যে কিছু করতে পারবে না—দ্বিতীয় ম্যাচটি সেটারই প্রমাণ দেয়। তাই, পাকিস্তানকে এই উপলব্ধি থেকে শিক্ষা নিয়ে উপলব্ধি করতে হবে যে তাদের ওপর কোনো চাপ নেই, তারা একটি অপ্রত্যাশিত জয়ের সন্ধানে আছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন