৮টি দলের অংশগ্রহনে ভারতের গোহাটিতে আজ থেকে শুরু হচ্ছে নারী বিশ্বকাপ 2025 ছবি : আইসিসি |
আজ, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ভারতীয় উপমহাদেশের মাটিতে পর্দা উঠলো আইসিসি নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপের ত্রয়োদশ আসরের। আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় এক মাসব্যাপী এই মহারণ চলবে ভারত এবং শ্রীলঙ্কার যৌথ আতিথেয়তায়। একদিকে যেমন স্বাগতিক ভারতের জন্য এটি ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জেতার এক বিরাট সুযোগ, অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো পরাশক্তিদের আধিপত্য ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ। এই বিশ্বকাপটি ঐতিহাসিক কারণ এটিই শেষ আসর যেখানে মাত্র ৮টি দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে; ২০২৯ সালের টুর্নামেন্ট থেকে দলের সংখ্যা বাড়িয়ে ১০ করা হবে।
একদিবসীয় ক্রিকেটের এই বিশ্ব মঞ্চ নারী ক্রিকেটের বৈশ্বিক মানচিত্রে ভারত, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মতো উদীয়মান দলগুলোর জন্য নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের ক্ষেত্র। ভারতীয় উপমহাদেশে ক্রিকেট শুধু খেলা নয়, এক আবেগের নাম। আর তাই, ১২ বছর পর যখন এই টুর্নামেন্ট ভারতীয় মাটিতে ফিরলো (ভারত সর্বশেষ ২০১৩ সালে নারী বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল), তখন প্রত্যাশা আর উত্তেজনা আকাশ ছুঁয়েছে। এই আসর শুধু ট্রফির লড়াই নয়, এটি নারী ক্রিকেটের জয়যাত্রা এবং এর ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার প্রতীক।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও উপমহাদেশের গুরুত্ব
নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৭৩ সালে, পুরুষদের বিশ্বকাপ শুরুরও দুই বছর আগে। গত কয়েক দশকে এই টুর্নামেন্ট নারী ক্রিকেটের জন্য সর্বোচ্চ মানের প্রতিযোগিতা হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, সাতবার শিরোপা জিতে, এই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সফল দল। তাদের নিরবচ্ছিন্ন আধিপত্য একটি বেঞ্চমার্ক তৈরি করেছে, যা বাকি দলগুলোকে ক্রমাগত চ্যালেঞ্জ জানাতে অনুপ্রাণিত করে।
উপমহাদেশে বিশ্বকাপের আয়োজন সবসময়ই বিশেষ মাত্রা যোগ করে। ভারত ও শ্রীলঙ্কার মাটিতে পিচগুলো সাধারণত স্পিন সহায়ক হয় এবং উপমহাদেশের দলগুলো ঘরের মাঠে সুবিধা ভোগ করে। পাশাপাশি, বিপুল সংখ্যক দর্শকের সমর্থন এবং গণমাধ্যমের মনোযোগ নারীদের এই খেলাটিকে অভূতপূর্ব উচ্চতায় নিয়ে যায়। এবার ভারত ও শ্রীলঙ্কা যৌথভাবে আয়োজন করছে, যার পেছনে রয়েছে একটি বিশেষ কূটনৈতিক ও লজিস্টিক্যাল কারণ—হাইব্রিড মডেল।
অস্ট্রেলিয়ার নারী ক্রিকেট দল গুয়াহাটিতে প্র্যাকটিসে সময় ছবি : আইসিসি |
হাইব্রিড মডেল: ভারত-শ্রীলঙ্কা যৌথ আতিথেয়তা
শুরুর দিকে ভারত এককভাবে এই বিশ্বকাপ আয়োজন করার কথা ঘোষণা করলেও, পরবর্তীতে আইসিসি একটি 'হাইব্রিড মডেল' গ্রহণ করে। এই মডেলের অধীনে টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলো ভারত ও শ্রীলঙ্কা—উভয় দেশেই অনুষ্ঠিত হবে। এই সিদ্ধান্তের প্রধান কারণ হলো অংশগ্রহণকারী দল পাকিস্তান। রাজনৈতিক এবং লজিস্টিক্যাল কারণে ভারত ও পাকিস্তান তাদের দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বা বড় টুর্নামেন্টে একে অপরের দেশে খেলতে রাজি হয় না।
তাই, পাকিস্তানের সব ম্যাচ এবং ভারত-পাকিস্তান হাই-ভোল্টেজ ম্যাচটি শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর বিখ্যাত আর. প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই মডেলটি নিশ্চিত করেছে যেন কোনো দলই টুর্নামেন্ট থেকে বাদ না পড়ে এবং সব ম্যাচ আন্তর্জাতিক মানের নিরপেক্ষ পরিবেশে সম্পন্ন হয়।
টুর্নামেন্টের গুরুত্বপূর্ণ ভেন্যুগুলো হলো:
- ভারত: বেঙ্গালুরু (এম. চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম), গুয়াহাটি (বর্ষাপাড়া ক্রিকেট স্টেডিয়াম), বিশাখাপত্তনম, এবং ইন্দোর। ফাইনাল ম্যাচটি বেঙ্গালুরু বা কলম্বোর মধ্যে কোথাও অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- শ্রীলঙ্কা: কলম্বো (আর. প্রেমাদাসা স্টেডিয়াম)।
এই হাইব্রিড মডেল নিশ্চিত করেছে যে টুর্নামেন্টটি নিরবচ্ছিন্নভাবে চলবে, পাশাপাশি দুই দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরাই বিশ্বকাপের উত্তেজনা উপভোগ করতে পারবেন। পাকিস্তান নারী ক্রিকেট টিমের একজন সদস্য প্র্যাকটিস চলাকালীন সময়ে ছবি : আইসিসি
যোগ্যতা অর্জন ও আটটি মহাযোদ্ধা
২০২৫ সালের বিশ্বকাপের জন্য আটটি দল যোগ্যতা অর্জন করেছে, যার মধ্যে ছয়টি দল আইসিসি নারী চ্যাম্পিয়নশিপ (২০২২-২০২৫) এর মাধ্যমে সরাসরি টিকিট পেয়েছে। বাকি দুটি দল এসেছে বাছাইপর্ব (কোয়ালিফায়ার) থেকে।
সরাসরি যোগ্যতাপ্রাপ্ত দল (আয়োজক ও আইসিসি চ্যাম্পিয়নশিপের শীর্ষ ৫):
১. ভারত (Host): স্বাগতিক দল হিসেবে সরাসরি অংশগ্রহণ।
২. অস্ট্রেলিয়া: আইসিসি চ্যাম্পিয়নশিপে অপ্রতিরোধ্য পারফর্ম করে শীর্ষে থেকে যোগ্যতা অর্জন।
৩. ইংল্যান্ড: ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের মাধ্যমে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে।
৪. নিউজিল্যান্ড: শক্তিশালী কিউই দল ট্রফির অন্যতম দাবিদার।
৫. দক্ষিণ আফ্রিকা: দ্রুত উন্নতি করা একটি দল, যাদের নিজেদের দিনে যেকোনো পরাশক্তিকে হারানোর ক্ষমতা আছে।
৬. শ্রীলঙ্কা: আইসিসি চ্যাম্পিয়নশিপের মাধ্যমেই তারা জায়গা নিশ্চিত করে, যা স্বাগতিক হিসেবে তাদের দায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসা দল (কোয়ালিফায়ার): ২০২৫ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত বাছাইপর্বে ছয়টি দল অংশ নেয়। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ টুর্নামেন্ট থেকে মূল আসরে জায়গা করে নেয়:
৭. পাকিস্তান: বাছাইপর্বের শিরোপা জিতে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বিশ্বকাপে প্রবেশ করেছে।
৮. বাংলাদেশ: রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নেট রান রেটে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপের টিকিট অর্জন করে
এই আটটি দলই রাউন্ড-রবিন ফরম্যাটে একে অপরের মুখোমুখি হবে। অর্থাৎ, প্রতিটি দল মোট ৭টি ম্যাচ খেলবে এবং পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ চারটি দল সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ পাবে।ভারতের নারী ক্রিকেট টিম ক্রিকেট টিমের একজন সদস্য প্র্যাকটিস চলাকালীন সময়ে ছবি : আইসিসি
বাংলাদেশ: বিশ্বকাপ মঞ্চে আরেকটি নতুন দিগন্ত
২০২৫ সালের বিশ্বকাপ বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। বাছাইপর্বের কঠিন পরীক্ষা পেরিয়ে মূল পর্বে জায়গা করে নেওয়াটাই ছিল এক বিশাল সাফল্য। নিগার সুলতানা জ্যোতি'র নেতৃত্বাধীন দলটি ক্রিকেট বিশ্বে নিজেদের উপস্থিতি আরও দৃঢ় করতে বদ্ধপরিকর।
বাছাইপর্বের সাফল্য: বাংলাদেশের নারী দল ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো শক্তিশালী দলের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে। চূড়ান্তভাবে, তারা ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে সামান্য বেশি নেট রান রেট নিয়ে বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে, যা তাদের দৃঢ় মানসিকতা ও উন্নতির প্রতিফলন।
বাংলাদেশের খেলার সূচি ও চ্যালেঞ্জ: বাংলাদেশের নারী বিশ্বকাপ অভিযান শুরু হচ্ছে ৩ অক্টোবর কলম্বোতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের মাধ্যমে। এরপর গুয়াহাটি এবং বিশাখাপত্তনমের মতো কঠিন ভেন্যুতে তাদের মুখোমুখি হতে হবে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের।
- ৩ অক্টোবর: বনাম পাকিস্তান (কলম্বো)
- ৮ অক্টোবর: বনাম ইংল্যান্ড (গুয়াহাটি)
- ১১ অক্টোবর: বনাম নিউজিল্যান্ড (বিশাখাপত্তনম)
- ১৪ অক্টোবর: বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা (বিশাখাপত্তনম)
- ১৭ অক্টোবর: বনাম অস্ট্রেলিয়া (বিশাখাপত্তনম)
- ২১ অক্টোবর: বনাম শ্রীলঙ্কা (কলম্বো)
- ২৬ অক্টোবর: বনাম ভারত (বেঙ্গালুরু)
বাংলাদেশ দলের জন্য এই টুর্নামেন্টের প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো বড় দলগুলোর বিপক্ষে ধারাবাহিক পারফর্ম করা। ওপেনার শামীমা সুলতানা, অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার সালমা খাতুন এবং অধিনায়ক জ্যোতি'র ওপর দলের ব্যাটিং নির্ভর করবে। তবে, স্পিন সহায়ক পিচে নাহিদা আক্তার এবং ফাহিমা খাতুনের স্পিন আক্রমণ প্রতিপক্ষকে ভোগাতে পারে। যেকোনো একটি বা দুটি বড় দলকে হারাতে পারলেই বাংলাদেশের জন্য এই বিশ্বকাপ সফল বলে বিবেচিত হবে।বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট টিম ক্রিকেট টিমের একজন সদস্য প্র্যাকটিস চলাকালীন সময়ে ছবি : আইসিসি
শিরোপার দাবিদার এবং তারকা খেলোয়াড়দের ঝলক
২০২৫ বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টের আগে, প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর শক্তি-সামর্থ্য বিবেচনা করা যাক:
১. অস্ট্রেলিয়া (বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ও হট ফেভারিট)
অস্ট্রেলিয়া দল অপ্রতিরোধ্য। তাদের ব্যাটিং গভীরতা, বৈচিত্র্যময় বোলিং এবং ফিল্ডিংয়ের উচ্চ মান তাদের সবসময়ই ফেভারিট রাখে। বেথ মুনি, এলিস পেরি এবং বিশেষ করে অ্যাশলে গার্ডনার (অলরাউন্ডার হিসেবে বিশ্বের অন্যতম সেরা) দলের মূল ভিত্তি। অধিনায়ক মেগ ল্যানিং এর অভিজ্ঞতাও দলের জন্য বিশাল সম্পদ। উপমহাদেশের পিচেও তাদের খেলার কৌশল সাধারণত খুব কার্যকর হয়।
২. ভারত (স্বাগতিক সুবিধা)
ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা ভারতের জন্য বড় অনুপ্রেরণা। তারা সর্বশেষ ২০২২ বিশ্বকাপে ভালো করতে পারেনি, কিন্তু এবার তাদের দল অনেক শক্তিশালী। অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌর এর নেতৃত্ব এবং বিস্ফোরক ব্যাটিং, স্মৃতি মন্ধানা'র ক্লাস এবং অভিজ্ঞ পেসার ঝুলন গোস্বামী'র (যদি তিনি খেলেন) অনুপস্থিতিতে পূজা বস্ত্রাকার ও দীপ্তি শর্মার অলরাউন্ড পারফরম্যান্স ভারতের সাফল্যের চাবিকাঠি। বিশেষ করে স্পিন বোলিংয়ে তারা যেকোনো দলকে চাপে ফেলতে সক্ষম। টুর্নামেন্টের প্রথম দিনেই তারা শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হচ্ছে গুয়াহাটিতে।
৩. ইংল্যান্ড (প্রবল প্রতিপক্ষ)
ইংল্যান্ড সবসময়ই বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল বা ফাইনালের প্রতিদ্বন্দ্বী। তাদের দলে ন্যাট স্কিভার-ব্রান্ট, ড্যানি ওয়াট এবং সোফি একলেস্টোনের মতো ম্যাচ উইনার রয়েছেন। স্কিভার-ব্রান্টের অলরাউন্ড নৈপুণ্য এবং একলেস্টোনের স্পিন বিষ প্রতিপক্ষের জন্য মাথাব্যথার কারণ। ইংল্যান্ড দল দ্রুত রান তোলার পাশাপাশি লম্বা ইনিংস খেলার ক্ষমতা রাখে।
৪. দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ড (অন্ধকার ঘোড়া)
দক্ষিণ আফ্রিকা গত কয়েক বছরে নারী ক্রিকেটে ধারাবাহিক উন্নতি দেখিয়েছে। লরা উলভার্ডট এবং অলরাউন্ডার মারিজান কাপ তাদের শক্তি। মারিজান কাপের পেস বোলিং এবং হার্ড-হিটিং ব্যাটিং তাদের যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রাখে। অন্যদিকে, নিউজিল্যান্ড দলও যথেষ্ট ভারসাম্যপূর্ণ। অ্যামেলিয়া কের এবং তার বোন জেস কের এর অলরাউন্ড দক্ষতা এবং সোফি ডিভাইন এর নেতৃত্ব কিউইদের নকআউট পর্বে নিয়ে যেতে পারে।
ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স: যাদের দিকে নজর থাকবে
এই বিশ্বকাপে বেশ কিছু খেলোয়াড় আছেন যারা তাদের একক নৈপুণ্যে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন।
১. মেগ ল্যানিং (অস্ট্রেলিয়া): ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অধিনায়ক এবং কঠিন পরিস্থিতিতে রান করার ক্ষমতা তাকে আলাদা করে তোলে।
২. হরমনপ্রীত কৌর (ভারত): মিডল অর্ডারে তার বিস্ফোরক ব্যাটিং এবং প্রয়োজনে অফ-স্পিন বোলিং ভারতকে শক্তি যোগায়।
৩. মারিজান কাপ (দক্ষিণ আফ্রিকা): নতুন বল হাতে উইকেট নেওয়া এবং ডেথ ওভারে গুরুত্বপূর্ণ রান করার ক্ষমতা রাখেন।
৪. সোফি একলেস্টোন (ইংল্যান্ড): বর্তমানে বিশ্বের সেরা স্পিনারদের একজন, যিনি রান আটকাতে এবং উইকেট নিতে সমান পারদর্শী।
৫. নিগার সুলতানা জ্যোতি (বাংলাদেশ): দলের মেরুদণ্ড, তার দৃঢ়চেতা নেতৃত্ব এবং মিডল অর্ডারে বড় রান করার ক্ষমতা বাংলাদেশের আশা-ভরসা।
টুর্নামেন্টের রোডম্যাপ ও প্রত্যাশিত ফলাফল
টুর্নামেন্টটি রাউন্ড-রবিন ফরম্যাটে হওয়ায়, প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। কোনো দলই হালকাভাবে প্রতিপক্ষকে নিতে পারবে না। শীর্ষ চারটি দল সেমিফাইনালে যাবে।
অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে সেমিফাইনালিস্ট হওয়ার লড়াই সবচেয়ে বেশি। তবে, নিউজিল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কা, বিশেষ করে ঘরের মাঠে, অঘটন ঘটানোর ক্ষমতা রাখে। বাংলাদেশের জন্য লক্ষ্য থাকবে কমপক্ষে একটি বা দুটি বড় দলের বিরুদ্ধে জয় ছিনিয়ে নেওয়া এবং টুর্নামেন্টে নিজেদের ছাপ রাখা। পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের উদ্বোধনী ম্যাচটি তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই বিশ্বকাপ কেবল আন্তর্জাতিক শিরোপার লড়াই নয়, এটি নারী ক্রিকেটারদের দক্ষতা, কঠোর পরিশ্রম এবং খেলার প্রতি ভালোবাসার উদযাপন। ভারত ও শ্রীলঙ্কার উষ্ণ আতিথেয়তায়, ক্রিকেটপ্রেমীরা আশা করছেন এক মাসব্যাপী উত্তেজনা, রোমাঞ্চ এবং স্মরণীয় মুহূর্তের। আজকের উদ্বোধনী ম্যাচের মধ্য দিয়ে যে যুদ্ধ শুরু হলো, তা শেষ হবে ২ নভেম্বরের ফাইনালের মধ্য দিয়ে, যখন বিশ্ব পাবে তাদের নতুন ওয়ানডে চ্যাম্পিয়ন। এই বিশ্বকাপ নারী ক্রিকেটের ইতিহাসে এক নতুন মাইলফলক স্থাপন করবে।