
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ হেড কোচ ফিল সিমন্স। ছবি: গেটি ইমেজ
আফগানিস্তানের বিপক্ষে পরপর দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জেতাতে বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে। কিন্তু সেই জয়গুলো এতটাই রুদ্ধশ্বাস ছিল যে দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স রসিকতা করে বলেছেন, এমন জয় ভক্তদের হৃদয়ের জন্য মোটেই ভালো নয়!
সিমন্স মজা করে বলেন, "এভাবে যখন আমরা বারবার কাছাকাছি ম্যাচ জিতি, দলের মধ্যে বিশ্বাস বাড়ে—এটা ঠিক। কিন্তু এখন আমাদের হার্টের জন্য ভালো কিছু হচ্ছে না। ভক্তদের হার্ট বারবার এই ধাক্কা নিতে পারবে না!"
আসলে, হয়েছেও তাই। শুক্রবার শারজাহতে মাত্র ১৪৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেও শেষ মুহূর্তে দ্রুত ৩টি উইকেট হারিয়ে টাইগাররা প্রায় হারের মুখে চলে গিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ৫ বল বাকি থাকতে ২ উইকেটে জিতে সিরিজ ২-০ তে নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচেও একই অবস্থা, ওপেনারদের ১০৯ রানের জুটির পরও ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে হয়েছিল।
বোলারদের প্রশংসা, স্পিন সামলানোর উন্নতি
কোচ সিমন্স অবশ্য দলের বোলিং এবং সম্মিলিত ব্যাটিং নিয়ে সন্তুষ্ট। বিশেষ করে বোলারদের সাধারণ কিন্তু কার্যকর পরিকল্পনার কথা তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, "আমাদের বোলারদের পরিকল্পনা ছিল খুব সহজ—সঠিক জায়গায় বল করা। শারজাহর এই কঠিন উইকেটে উইকেট-টু-উইকেট সোজা বল করা দরকার ছিল, আর আমাদের বোলাররা ঠিক সেটাই করেছে। বিশেষ করে স্পিনাররা অসাধারণ বোলিং করেছে।"
আফগানদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র স্পিন আক্রমণ সামলানো নিয়েও খুশি কোচ। তিনি স্বীকার করেন যে প্রথম ম্যাচের চেয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে বড় উন্নতি হয়েছে।
সিমন্স বলেন, "আজ আমরা তাদের স্পিনারদের ভালোভাবেই মোকাবিলা করেছি। এটাই তাদের শক্তি, কিন্তু আজ আমরা সেটাকে সামলে নিতে পেরেছি। আগের দিন [বৃহস্পতিবার] আমরা সেটা পারিনি, কিন্তু আজ [শুক্রবার] আমরা অনেক ভালো ছিলাম।"
লোয়ার মিডল অর্ডারের দায়িত্বশীলতা
দ্বিতীয় ম্যাচে ওপেনাররা ব্যর্থ হলেও, মাঝারি ও লোয়ার মিডল অর্ডার চাপের মুখে দারুণভাবে দাঁড়িয়ে যায়। শামীম হোসেন (৩৩) এবং জাকের আলী (৩২) দারুণ ভূমিকা রাখেন। তবে ফিনিশার হিসেবে আবারও ঝলসে ওঠেন নুরুল হাসান সোহান, যিনি ২১ বলে অপরাজিত ৩১ রান করেন। শেষদিকে শরীফুল ইসলামের ৬ বলে ১১ রানের ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস জয় এনে দেয়।
সিমন্স বলেন, "কাল [বৃহস্পতিবার] ওপেনাররা দেখিয়েছে তারা কী করতে পারে, আর আজ [শুক্রবার] লোয়ার মিডল অর্ডারও তাদের যোগ্যতা দেখিয়ে দিল। আমরা আক্রমণাত্মক ও উত্তেজনাপূর্ণ ক্রিকেট খেলতে চাই—আর সেটাই আমরা এখন খেলছি।"
ব্যাটসম্যানদের দায়িত্ব নেওয়ার মানসিকতায় মুগ্ধ কোচ। তিনি বলেন, "জাকের আর শামীম শুরুটা করে, আর সোহান আমাদের জন্য শেষ করে দেয়। আমরা তাদের কাছে এটাই চাই—যখনই সুযোগ পাবে, দায়িত্ব নিতে হবে।"
ক্লিন সুইপের সুযোগ
কোচ সিমন্স তার বোলিং ইউনিটেরও বিশেষ প্রশংসা করেছেন, যা সম্প্রতি ধারাবাহিকভাবে উন্নতি করছে।
তিনি বলেন, "আমাদের বোলিং সবসময়ই ভালো হচ্ছে এবং এখন এটা এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, আমরা জানি আমরা যে কম্বিনেশনই ব্যবহার করি না কেন, বোলারদের ওপর ভরসা করতে পারব।"
আগামী রবিবার একই মাঠে হবে সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ টি-টোয়েন্টি, যেখানে টাইগারদের সামনে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ক্লিন সুইপ করার সুবর্ণ সুযোগ থাকছে।
টাইগারদের এমন রুদ্ধশ্বাস জয় কি আপনার হার্টবিটও বাড়িয়ে দেয়? কমেন্ট করে জানান!