ইংল্যান্ডের নতুন পেসার ও দ্য হান্ড্রেডে হ্যাটট্রিক হিরো—সনি বেকার কে?

Image credit: Getty / The Hundred
ইংল্যান্ডের ক্রিকেটে নতুন এক নাম উঠছে আলোচনায়—সনি বেকার। ২২ বছর বয়সী এই তরুণ পেসার দ্য হান্ড্রেড টুর্নামেন্টে ম্যানচেস্টার অরিজিনালসের হয়ে খেলতে নেমে নর্দার্ন সুপারচার্জার্সের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছেন। মুহূর্তেই তিনি ক্রিকেটপ্রেমীদের নজরে চলে এসেছেন।
কিংবদন্তির কাছ থেকে শেখা
বেকারের ভাগ্য বলা যায় বেশ উজ্জ্বল। মাত্র এক মাস আগে তিনি ইংল্যান্ডের সর্বকালের সেরা বোলার জেমস অ্যান্ডারসন-এর সঙ্গে একই দলে ছিলেন। তবে নিজের স্বভাবসিদ্ধ কৌতূহলী চরিত্র কিছুটা সংযত করতে হয়েছিল। কারণ তিনি নিজেই বলেছেন—“আমি জানি আমি অনেক প্রশ্ন করি, তাই অ্যান্ডারসনকে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত করার চেষ্টা করেছি।”
স্বপ্নের ডাক
একদিন হঠাৎ এক অজানা নম্বর থেকে ফোন পান বেকার। ফোনের অপর প্রান্তে ছিলেন ইংল্যান্ড কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, যিনি তাকে প্রথম আন্তর্জাতিক দলে ডাকের খবর দেন। এতটাই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন বেকার যে তিনি মুহূর্তের জন্য নির্বাক হয়ে যান।
ইনজুরি থেকে ফেরার গল্প
মাত্র ১৭ বছর বয়সেই প্রথম স্ট্রেস ফ্র্যাকচার ধরা পড়ে বেকারের পিঠে। এরপরও একাধিকবার একই সমস্যায় ভুগেছেন। এখন প্রতিদিন হাড়ের ঝোল (bone broth) পান করেন তিনি শরীর শক্ত রাখতে। তার বিশ্বাস, ইনজুরি এড়াতে এটি বড় ভূমিকা রেখেছে।
নোটবুকের বোলার
বেকার মাঠে যেমন মনোযোগী, খেলার বাইরে ঠিক ততটাই বিশ্লেষণী। প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের নিয়ে আলাদা নোটবুক রাখেন তিনি। সেখানে থাকে কৌশল, পরিকল্পনা আর ভবিষ্যতের লক্ষ্য। স্টিভ স্মিথ-এর বিপক্ষে বোলিং করার আগে সেই নোটবুক ঘেঁটে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন।
গতির ঝলক
দ্য হান্ড্রেডে অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার-কে টানা পাঁচ বল ডট দিয়ে চাপে ফেলেছিলেন। এমনকি জোফরা আর্চারও তার চেয়ে বেশি গতিতে বল করতে পারেননি। বেকারের নিজের ভাষায়— “গতি যত বেশি, তত ঝুঁকি। তবে সেই সঙ্গে আসে বিশেষ দিন, যখন বল রিভার্স সুইং করতে শুরু করবে আর সবাই বলবে—এই ছেলেটাকে বল দাও।”
ভবিষ্যতের স্বপ্ন
এখনই অনেকে তাকে ইংল্যান্ডের ভবিষ্যতের বড় সম্পদ হিসেবে দেখছেন। শীতকালে তিনি আবারও অস্ট্রেলিয়ায় যাবেন, যেখানে লায়ন্স দলের সঙ্গে থাকবেন। টেস্ট অভিষেকও হতে পারে খুব শিগগিরই। তবে বেকার নিজে ধীরস্থির—“প্রথমে দ্য হান্ড্রেড জিতি, তারপর দক্ষিণ আফ্রিকা ও আয়ারল্যান্ড সিরিজ নিয়ে ভাবি।”
👉 সনি বেকারের গল্প কেবল একজন তরুণ ক্রিকেটারের উত্থান নয়, বরং ধৈর্য, কঠোর পরিশ্রম আর শেখার আগ্রহের প্রতিফলন। ইংল্যান্ড ক্রিকেটের ভবিষ্যতে তার নাম আরও জোরে শোনা যাবে বলেই প্রত্যাশা।