মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর সাংবাদিকদের তামিম বলেছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেটের ফিক্সিং বন্ধ করার আগে নির্বাচনের ফিক্সিং বন্ধ করেন। ছবি : প্রথম আলো
তামিম ইকবাল, দেশের ক্রিকেটের একজন সাবেক সফল অধিনায়ক, বুধবার আবেগ ও হতাশা নিয়ে আসন্ন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচন থেকে তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ক্রিকেটকে সঠিক পথে পরিচালনার স্বপ্ন নিয়ে আসা এই তারকার হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত 'সরকারি হস্তক্ষেপ' এবং 'ষড়যন্ত্রের' অভিযোগের কারণে। এই ঘটনা দেশের ক্রিকেট প্রশাসনে বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে।
বুধবার সকালে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ সময়ে তামিমকে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের বিসিবি কার্যালয়ে দেখা যায়। তিনি একা নন, তার সঙ্গে ছিলেন তার প্যানেলের আরও বেশ কয়েকজন প্রার্থী — রফিকুল ইসলাম বাবু, ইস্রাফিল খসরুসহ অন্যরা। মূলত মঙ্গলবার রাতে তাদের প্যানেল জরুরি বৈঠক করে সম্মিলিতভাবে নির্বাচন বর্জনের কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়।
কেন এই সরে আসা?
তামিম প্যানেলের এই সিদ্ধান্তের পেছনে কাজ করেছে এক গভীর হতাশা। নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর পুত্র ইস্রাফিল খসরু সাংবাদিকদের বলেন, "বিসিবি নির্বাচনে নির্লজ্জ হস্তক্ষেপ চলছে। এখানে কোনো নির্বাচনের পরিবেশ নেই। স্বৈরতন্ত্রের চর্চা হচ্ছে।" তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন, "সরকারের একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী এখানে হস্তক্ষেপ করছে।"
এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে তারা ক্রিকেট প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার দাবি জানালেন। তাদের মতে, এমন পরিবেশে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা অর্থহীন, যেখানে খেলার মাঠের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে রাজনৈতিক প্রভাব।
আদালতের আদেশের প্রভাব
তামিমের সরে দাঁড়ানোর এই সিদ্ধান্ত আসে হাইকোর্ট বেঞ্চের একটি আদেশের পরই। সাবেক বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের করা এক রিট পিটিশনের উপর আদালত স্থগিতাদেশ জারি করেন। এই রিটে ৬ অক্টোবরের নির্বাচনে ১৫টি বিতর্কিত ক্লাবকে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। এতে নির্বাচনের প্রক্রিয়া আরও ঘোলাটে হয়ে ওঠে।
তামিম ইকবালের মতো একজন জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো শুধু একটি নির্বাচনের ঘটনা নয়, এটি বাংলাদেশের ক্রিকেটের সুস্থ পরিবেশের জন্য একটি বড় উদ্বেগের কারণ। তার এই প্রতিবাদ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালনায় প্রভাবশালীদের ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী বার্তা দিল।