ভারত সরকারের অনলাইন রিয়েল-মানি গেমিং নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত বড় ধাক্কা দিয়েছে ক্রিকেট বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)-কে। এই নিষেধাজ্ঞার কারণে জাতীয় দলের প্রধান স্পন্সর ড্রিম১১-এর সঙ্গে বোর্ডের বহুল আলোচিত চুক্তি ভেঙে গেছে। এখন বিশ্বের অন্যতম ধনী ক্রিকেট বোর্ডকে নতুন করে প্রধান স্পন্সর খুঁজতে হচ্ছে।
ড্রিম১১-এর চুক্তি ভেঙে গেল কেন?
ড্রিম১১ গত বছর প্রায় ৩.৬ বিলিয়ন রুপির (প্রায় ৪৪ মিলিয়ন ডলার) তিন বছরের একটি চুক্তি করেছিল, যা ২০২৬ সাল পর্যন্ত চালু থাকার কথা ছিল। তবে কেন্দ্রীয় সরকার ফ্যান্টাসি স্পোর্টসসহ সব ধরনের রিয়েল-মানি অনলাইন গেমিং ও তাদের প্রচার নিষিদ্ধ করেছে। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই ভারতীয় ক্রিকেট দলের জার্সিতে আর ড্রিম১১-এর নাম দেখা যাবে না।
গত মাসেই ভারতের সংসদের উচ্চ কক্ষ পাস করেছে ‘দ্য প্রমোশন অ্যান্ড রেগুলেশন অব অনলাইন গেমিং বিল ২০২৫’, যেখানে এই খাতকে সরাসরি বেআইনি ঘোষণা করা হয়।
নতুন স্পন্সরের খোঁজে বিসিসিআই
ক্রিকেটের বিপুল জনপ্রিয়তা এবং ভারতের বিশাল জনসংখ্যা বিসিসিআই-কে বিশ্বের সবচেয়ে লাভজনক বোর্ডে পরিণত করেছে। সম্প্রচার চুক্তি হোক বা স্পন্সরশিপ—সব ক্ষেত্রেই তারা বড় অঙ্কের আয় করে থাকে।
নতুন স্পন্সরশিপের জন্য বিড জমা দেওয়ার শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ সেপ্টেম্বর। এর মধ্যে ৯ সেপ্টেম্বর শুরু হবে এশিয়া কাপ। ফলে উদ্বোধনী সপ্তাহে হয়তো ভারতকে জার্সির সামনের অংশে কোনো স্পন্সর ছাড়াই মাঠে নামতে হতে পারে। বিশেষ করে ১৪ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের বিপক্ষে হাই-ভোল্টেজ ম্যাচের আগেই যদি নতুন স্পন্সর না মেলে, তবে সেটি হবে এক বিরল দৃশ্য।
আয়ের নতুন পরিকল্পনা
‘দ্য ইকোনমিক টাইমস’-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বিসিসিআই নতুন চক্রে আরও বেশি আয়ের পরিকল্পনা করছে। তারা চায়—
- দ্বিপাক্ষিক সিরিজের প্রতিটি ম্যাচের জন্য ৩৫ মিলিয়ন রুপি,
- আইসিসি ও এসিসি টুর্নামেন্টে ভারতের প্রতিটি ম্যাচের জন্য ১৫ মিলিয়ন রুপি।
২০২৫ থেকে ২০২৮ পর্যন্ত প্রায় ১৪০টি ম্যাচ থেকে বোর্ডের আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৪.৫২ বিলিয়ন রুপি। তুলনায়, ড্রিম১১-এর চুক্তি থেকে জুলাই ২০২৩ থেকে মার্চ ২০২৬ পর্যন্ত বিসিসিআই পেত ৩.৫৮ বিলিয়ন রুপি। অর্থাৎ নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী বোর্ডের আয় বাড়বে প্রায় ২০% (৯৪০ মিলিয়ন রুপি বেশি)।